Monday, December 23, 2024

এবার দেশে দেখা দিতে পারে ওষুধ সংকট

আরও পড়ুন

বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, চাকরি স্থায়ীকরণসহ ১৮ দফা দাবিতে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে আন্দোলন করছেন ওষুধ উৎপাদনে জড়িত শ্রমিকরা। প্রায় দুই সপ্তাহের এ আন্দোলনে স্কয়ার, জেনারেল ফার্মা, ইনসেপ্টার দুটি কারখানাসহ ১৯টি ফার্মাসিউটিক্যালসে ওষুধ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি বন্ধ হওয়ার পথে। এতে দেশে ওষুধের সংকট দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর তেঁজগাওয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছে ঔষধ শিল্প সমিতি। কারাখানায় নিরাপত্তা চেয়ে করা এই সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থা পরিচালক ও সমিতির সভাপতি আবদুল মুক্তাদির।

সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল মুক্তাদির বলেন, গত ৫০ বছরে দু-একটি ঘটনা ছাড়া এখানে কাজ করা শ্রমিকদের চাহিদা নিয়ে অসন্তোষ ছিল না। তাদের খাওয়া-দাওয়া, বেতন-ভাতাদিসহ সবকিছুর ব্যাপারে আমরা সবসময় সচেতন। কখনোই তাদের অসন্তোষ দেখা যায়নি। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে হঠাৎ করেই বিভিন্ন দাবি-দাওয়া জানাচ্ছেন।

আরও পড়ুনঃ  সাগরে গভীর নিম্নচাপ: ঘণ্টায় ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বাতাসের গতিবেগ

যা পূরণ করা আমাদের জন্য প্রায় অসম্ভব। কারণ, বিগত চার বছরে ডলারের উচ্চ মূল্যের কারণে কাঁচামাল আমদানি করতে গিয়ে মাঝারি ধরনের কোম্পানিগুলো বন্ধ হওয়ার পথে। বড় যে ২৫ থেকে ৩০টি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি রয়েছে তাদের লাভের পরিমাণও একেবারে সীমিত।

ঔষধ শিল্প সমিতির সভাপতি বলেন, স্টাফদের বন্দি করে রেখে তারা কাগজে স্বাক্ষর নিতে চাচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত একটি কোম্পানির স্টাফদের বন্দি করে রাখা হয়েছে। ইনসেপ্টায়ও প্রায় ৪শ স্টাফকে সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আটকে রাখা হয়। দাবি-দাওয়া জানাতে পারে তাই বলে এভাবে জিম্মি করে তো হতে পারে না। বিজ্ঞানী ও ঊর্ধ্বতনদের হেনস্তা করা হচ্ছে। এভাবে জিম্মি করে রাখবে এবং আমরা সহযোগিতা পাব না, এটা আমাদের উদ্বেগের ও হতাশাজনক। আমরা ভাবতে পারছি না যে- কর্মীরা এমন আন্দোলন করতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  হত্যা ও সহিংসতার দায়ে শেখ হাসিনাকে জবাবদিহির মুখোমুখি দেখতে চায় জাতিসংঘ

এভাবে চললে মজুদ থাকা ওষুধ দিয়ে কিছুদিন হয়তো চলবে কিন্তু এরপরই সংকট তৈরি হবে। এর পেছনে কারা আছে আমরা সেটি জানি না কিন্তু ষড়যন্ত্র হচ্ছে এটা বুঝতে পারছি। তাই, সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

সমিতির সভাপতি বলেন, অনেক কারখানা ভাঙচুর করা হয়েছে, অনেকে সমন্বয় করতে পারছে না। ইতোমধ্যে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ইনসেপ্টার দুটি কারখানা, জেনারেল ফার্মাসহ ১৯টি ওষুধ তৈরির কারখানা বন্ধ রয়েছে। যেগুলো চলছে- কখনো বন্ধ থাকছে, কখনো চালু থাকছে। সহিংসতা হোক এটা আমরা চাই না। ওষুধ শিল্প সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পুরো দেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং তা অপূরণীয়। কোনো ধরনের সহিংসতা ও জিম্মি দাবি- আদায়ের ভাষা হতে পারে না। সরকারের মাধ্যমে একটা আলোচনা হতে পারে। আমরা নিরাপত্তা চাই।

আরও পড়ুনঃ  স্বামীকে ছেড়ে শাশুড়ির সঙ্গে সংসার করতে চান পুত্রবধূ

তিনি বলেন, শ্রমিকদের একটা দাবি পূরণ করলে নতুন করে আরও দাবি তোলা হচ্ছে। একটার পর একটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোনোভাবেই আমরা এটাকে থামাতে পারছি না। এ কারণে আমাদের সন্দেহ হয়, এতদিন কোনো দাবি না জানালেও হঠাৎ করে কেন এমন? আবার পূরণ করলেও কেন মানছে না, এটা আমাদের বোধগম্য নয়। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়কে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোনটি আগে করবেন সেটি নিয়ে ভাবছেন। ওষুধ শিল্পকে আমরা অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। আমরা চাই ওনারা এখনই এগিয়ে আসুন।

তিনি আরও বলেন, এভাবে চললে মজুদ থাকা ওষুধ দিয়ে কিছুদিন হয়তো চলবে কিন্তু এরপরই সংকট তৈরি হবে। এর পেছনে কারা আছে আমরা সেটি জানি না। এটা আমাদের কাজও না। কিন্তু ষড়যন্ত্র হচ্ছে এটা বুঝতে পারছি। তাই, সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ