অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মত অনুযায়ী চলতে হবে কিনা সে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর বনানী কবরস্থানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের এমন মন্তব্য করেন তিনি।
মূলত গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ফেসবুকে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের স্ট্যাটাসের প্রতিক্রিয়ায় রুহুল কবির রিজভী এমন মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, আমরা সব ঘটনা অতিক্রম করে বুক চিতিয়ে বছরের পর বছর রাজপথে থেকেছি। কোনটাকে সমর্থন করতে হবে, আর কোনটাকে নয় এবং কোন বিষয়ে কথা বলতে হবে, এটা কি উপদেষ্টারা এসে বিজ্ঞ রাজনীতিবিদদের শেখাবেন?
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল্যবৃদ্ধিতে সরকারের দৃষ্টিহীনতা নিয়ে কি সমালোচনা করা যাবে না? সরকারের প্রশাসন যদি নিরপেক্ষভাবে কাজ না করে, তার জন্য কি সমালোচনা করা যাবে না? তাহলে কীসের ভয় দেখান যে, ১/১১-এর পুনরাবৃত্তি হবে।
রিজভী বলেন, জিয়া পরিবার থেকে শুরু করে দেশের জনগণের এত ত্যাগ-আত্মদান, এত রক্ত ঝরেছে শুধু একটু মুক্ত নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য। তার ফলশ্রুতিতে আমরা গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ কাঁপানো, পৃথিবী কাঁপানো একটি বিজয় দেখেছি। এই আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে। সব গণতন্ত্রকামী দল এই সরকারকে সমর্থন দিয়েছে।
অবাধ নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের এতো গড়িমসি কেন, এমন প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, জনগণের প্রত্যাশা এই সরকার নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে। গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। কিন্তু যখন শুনি- আগে সংস্কার পরে নির্বাচন, এ যেন মনে হয় শেখ হাসিনার সেই প্রতিধ্বনি- আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র। কোনো উপদেষ্টার কাছে এটা শোভা পায় না।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমাদের সব আস্থা আপনার উপর দেওয়া হয়েছে। তাহলে এত গড়িমসি কেন। কেন শেখ হাসিনার কথার পুনরাবৃত্তি হবে, আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। আমরা এ কথা শুনতে চাই না। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, যুগের পর যুগ ধরে সংস্কার হতে পারে। এর জন্য গণতন্ত্রের যে প্রক্রিয়া, গণতন্ত্রের প্রবাহমান নির্বাচনকে আটকে রাখবেন কেন?
বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সারা বাংলাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। মায়ের কোলে মৃত সন্তানের মাথা দেখে এ দেশের কোটি কোটি মানুষ কেঁদেছে। শেখ হাসিনার বর্বরতা ও নিষ্ঠুরতায় একজন সন্তানের সৎকারের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
কোকোর কবর জিয়ারতের সময় বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।